ইবাদ-তাহমিদা আজীবন সুখে থাকুক

তখন আমাদের বাড়িটি মাটির ঘরের, শীতল পাটির বিছানায় আব্বু শুয়ে শুয়ে আমার তিলাওয়াত শুনছিলেন। দেয়ালের পেছনে তখন চলছে শলা-পরামর্শ—

-এই এমুই আয়
-কিল্লাই?
-ডাংগুট্টি খেইল্লাম
-আব্বা ঘরো, মাইরবো
-না, কইতে হাইত্তোনা, হেতে ঘুমে

ইবাদের ন্যাংটাকালের সহপাঠীরা বাড়ির পেছনে এভাবেই কথা বলছিল। মেক্সিমাম পিচ্চিরা ছিলো কুমিল্লা-চাঁদপুরের। ইবাদ মোটামুটি তাদের ভাষা রপ্ত করে নিয়েছিলো।

আব্বা আমাকে বললেন,‘ইবাদরে লইয়া আও।’
-কিতাবা! বাক্কা দেকি চানফুরি মাত হিকিলাইছো!
ইবাদ ঠায় দাঁড়িয়ে, কেঁদে দেবে অবস্থা।

আব্বা ব্যাপারটা বুঝে আর ধমক না দিয়ে বললেন, ‘আর হিকা লাগতোনায়, যাও গোসল খরিয়া রেডি অও।’

সেদিনই ইবাদকে বাড়ি থেকে সিলেট নিয়ে আসা। কখন কি পদক্ষেপ নিতে হয় আব্বা সেটা খুব ভালো করেই বুঝতেন। আজ ইবাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপে আব্বা নেই, হুট করেই কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো একটা বটবৃক্ষ নেই, এই বেদনা যেমন আমি বুঝতে পারছি, ইবাদও হয়তো বুঝছে।

সেই ইবাদ আজ আলহামদুলিল্লাহ পরিণত বয়সে। পা রাখছে যুগল জীবনে। এই জীবনটা উভয়ে বুঝে নিলে হয়ে যায় মধুময় একটি অধ্যায়।

ইবাদ-তাহমিদা আজীবন সুখে থাকুক, প্রভুর দরবারে এই-ই চাওয়া।

ইনাম বিন সিদ্দিক
লেখক : বরের মেজো ভাই, আলেম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

Scroll to Top