মানুষের জীবনে ধর্মীয় ও সামাজিক—সব দৃষ্টিকোণ থেকে বিয়ে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, ইসলামে বিয়েকে বলা হয়েছে ঈমানের অর্ধেক। অর্থাৎ বিয়ের মাধ্যমেই ঈমানের পূর্ণতা পায়। সেটি পুরুষ হোক বা নারী। উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য। এ কথার আরও প্রমাণ পাওয়া যায় রাসুল সা.-এর জীবনী থেকে। কারণ, তিনি আল্লাহর হুকুমে নিজে ২৫ বছর বয়সে বিয়ে করেছেন এবং তাঁর বিয়ের পরই আল্লাহ তাকে নবুওয়াত দান করেছেন। বিয়ের আগে আল্লাহ তাকে নবুওয়াত দেননি।
বিয়ে সম্পর্কিত একটি হাদিস। যা হজরত আবু জর গিফারী রা. থেকে বর্ণিত। একবার রাসুলুল্লাহ সা. আক্কাফ রা.-কে বললেন, হে আক্কাফ! তোমার কি স্ত্রী আছে? তিনি বললেন, না। রাসুলুল্লাহ সা. বললেন, তোমার কি সম্পদ ও স্বচ্ছলতা আছে? তিনি বললেন, আমার সম্পদ ও স্বচ্ছলতা আছে। রাসুলুল্লাহ সা. বললেন, তুমি এখনও শয়তানের ভাইদের দলভুক্ত। যদি তুমি খ্রিষ্টান হতে তবে তাদের রাহেব (ধর্ম গুরু) হতে। নিঃসন্দেহে বিয়ে করা ইসলামের রীতি। তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট সেই ব্যক্তি যে (উপযুক্ত হওয়ার পরও) অবিবাহিত। তোমরা কি শয়তানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাও? শয়তানের কাছে নারী হলো অস্ত্র। সবাই নারী সংক্রান্ত ফিতনায় জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু যারা বিয়ে করছে তারা নারীর ফিতনা থেকে পবিত্র। তারপর বললেন, আক্কাফ! তোমার ধ্বংস হোক। তুমি বিয়ে করো নতুবা তুমি পশ্চাৎপদ মানুষের মধ্যে থেকে যাবে। (মুসনাদে আহমদ, জমউল ফাওয়ায়েদ, ইমদাদুল ফাতওয়া খ- ২, পৃষ্ঠা ২৫৯।)
উপরোক্ত হাদিস অনুাযায়ী অবিবাহিত স্বাবলম্বী পুরুষকে পশ্চাৎপদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবে আমাদের সমাজে এমনটাই দেখা যায়। স্বাবলম্বী পুরুষরাও অনেক সময় সঠিক সময়ে বিয়ে না করার কারণে যৌবনের তাড়নায় লিপ্ত হচ্ছে বিভিন্ন অপরাধে। যদিও তারা স্বাবলম্বী হওয়া বলতে অনেক সময় অঢেল টাকা-পয়সা, বিশাল ক্যারিয়ারিস্ট হওয়াকে বুঝায়। ফলে রিজিকের চিন্তা সম্পূর্ণ নিজেদের উপর চাপিয়ে নিয়ে অনাকাক্সিক্ষতভাবে শিরক করার মতো গোনাহ করে ফেলছে। সমাজ এগিয়ে যাচ্ছে ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে। যে সমাজের চারিদিকে ব্যাভিচারের নানা উপকরণ ছড়িয়ে রয়েছে হাতের নাগালেই, সে সমাজে যুবসমাজ ব্যভিচার বা বিবাহ-বহির্ভূত পাপাচারে লিপ্ত হবে, এটি তো স্বাভাবিক ব্যাপার। ফলে তারা নিকৃষ্ট সব কাজে জড়িয়ে পড়তেও দ্বিধা করছে না। তাছাড়া যে সমাজে বিয়েকে কঠিন করা হয়, সেখানে ব্যাভিচার বা অবৈধ যৌনাচার বেড়ে যাবে। এটি খুবই স্বাভাবিক।
আল্লাহর অমোঘ বিধান, নবী করীম সা.-এর সুন্নাত পালনার্থে পাড়ি দিতে হয় হাজারো বাঁকা পথ। কণ্টকাকীর্ণ পথে কাটাতারে আবদ্ধ হয়ে অনেকেই ধুমড়ে-মুচড়ে পড়েন। আবার আল্লাহর পিয়ারা বান্দারা সেই শয়তানের পথ দেখানো জীর্ণ-শীর্ণ কঠিন রাস্তা থেকে হাস্যোজ্জ্বল বদনে ফিরে সিরাতে মুস্তাকীমের পথে হাঁটেন। মূলত যারা বুঝে, মানে, তাদের জন্য সেই কঠিন পথই সহজ সরল পথ।
ঠিক তেমনিভাবে জীবনের কতগুলো বসন্ত পাড়ি দিয়ে, সহজ-সরল, সুন্দর পথে হেঁটে সহাস্যমুখ, সদালাপী, তরুণ শিক্ষক, আইটি বিশেষজ্ঞ, সৃজনঘরের আমাদের সারথি প্রিয় ইবাদ বিন সিদ্দিক ভাই যুগলবন্দী হতে চলেছেন। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আল্লাহর বিধান এবং রাসুল সা.-এর সুন্নাত পালন করছেন। আলহামদুলিল্লাহ।
সময় আর বাকি নেই! ছুঁই ছুঁই কয়েকঘণ্টা, কয়েকমিনিট বাকি! নির্দ্বিধায় বলা যায়, ভাবী পেয়ে যাবেন একজন আদর্শবান স্বামী। নিজেকে নিয়ে তিনি সত্যিই গর্ব করতে পারবেন।
শরতের শিউলিঝরা, জ্যোৎস্নার নভোচারী দুটি গৃহের এক হওয়াকে আল্লাহ যেন কবুল করেন। আমিন।
সাইফ রাহমান
লেখক : সারথি, সৃজনঘর